বর্তমান বিশ্বে সবচেয়ে বড় আতংকের নাম হলো “COVID-19” বা “করোনা ভাইরাস”। যেটি খুব কম সময়েই শত শত মানুষকে ধরাশায়ী করে দিতে পারে এবং তা করছেও।আর এই ভাইরাসের তান্ডব যে কবে শেষ হবে তা জানেনা কেউ।মিলছেনা এটি আটকানোর কোনো উপায়।এই তান্ডব শেষ হতে লাগতে পারে ১/২ মাস কিংবা ১ বছর কিংবা তারও বেশি সময়।এই ভাইরাসের কবলে পরা প্রথম দেশ ও শহর হলো চীন এবং উহান শহর।চীনকে ধরাশায়ী করার পর এটি ছড়িয়ে পড়েছে ইতালী,স্পেন,জার্মানী সহ প্রায় সকল ইউরোপীয়ান দেশে।এছাড়াও সবচেয়ে উন্নত দেশগুলোতেও(যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র,কানাডা,অস্ট্রেলিয়া ইত্যাদি) ছড়িয়ে যাচ্ছে বিদ্যুৎ বেগে।এর কবল থেকে রেহাই পায়নি আমাদের দেশও।এই ভাইরাস যেমন হাজার হাজার মানুষ মারছে তেমনি একটি ভালো কাজও করছে।তা হলো ” বিশ্ব পরিবেশের ভারসাম্য ফিরানো”।
প্রতিদিন পুরো বিশ্বে ফ্যাক্টরিগুলো কিংবা যানবাহনগুলো যে পরিমান ধোয়া ছাড়ে এবং বায়ু দূষণ করে তা অকল্পনীয়। কিন্তু বর্তমানে আক্রান্ত প্রায় সব দেশের সব ফ্যাক্টরি বন্ধ এবং মানুষ গৃহবন্দী।এতে চলছেনা যানবাহন।তৈরী হচ্ছেনা ধোয়া আর বায়ু মুক্তি পাচ্ছে দূষনের হাত থেকে। এছাড়াও যদি আমরা মাটির কথা একবার ভাবি দেখতে পাবো যে মাটিও আছে শান্তিতে। মাটির সাথে ইন্ডাস্ট্রিয়াল বর্জ্য মিশছেনা,মিশছেনা বিভিন্ন ময়লা আর মাটির সবচেয়ে বড় শত্রু প্লাস্টিকের হাত থেকেও মাটি দূষিত হওয়া থেকে রেহাই পাচ্ছে।
এখন আসি জীবনের দিকে অর্থাৎ পানির দিকে। প্রতিনিয়ত পানি পথে মানুষ যাতায়াত করছে এবং বিভিন্ন মালবাহী জাহাজ বহন করছে অনেক অনেক মাল। এসবের জন্য পানি নোংরা হচ্ছে,দূষিত হচ্ছে।এই ভাইরাসের ফলে এখন যাতায়াত ও পানিপথে মাল বহন বন্ধ প্রায়। এতে দূষনের মাত্রাও কমে গেছে।মাটি,পানি,বায়ু হচ্ছে পরিবেশের প্রাণ। এই উপাদান গুলো দূষন থেকে কিছুটা রেহাই পাওয়ায় বিশ্ব পরিবেশ অনেকাংশে হয়ে উঠছে অনেক সুন্দর এবং দূষনমুক্ত। এছাড়াও প্রতিদিন মানুষ চলাচলে তৈরি হয় ধুলাবালি। এখন মানুষ গৃহবন্দী থাকায় ধুলাবালিও কম,পরিবেশও সুন্দর।
আরেকটি মজার বিষয় আছে। মানুষ গৃহবন্দী এবং নেই তেমন কাজকর্ম এবং আছে অফুরন্ত সময়। তাই মানুষ নিজেদের ঘরে টবে লাগানো গাছের যত্ন নিচ্ছে পরিপূর্ণভাবে এবং অনেকেই নতুন করে গাছ লাগানোর চিন্তা করছে নিজেদের ছাদ কিংবা বারান্দায়। করোনার দাপটে বিশ্ব পরিবেশ একটু শান্তি করে শ্বাস নিতে পারছে।
সব বিবেচনা করে বলা যেতে পারে করোনা ভাইরাস ভারসাম্যহীন পৃথিবীকে নতুন করে ভারসাম্যে ফিরিয়ে আনতে নিজের অজান্তেই কাজ করছে। বিশ্ব পরিবেশ ঠিক হচ্ছে আপন নিয়মেই।