কাবুলিওয়ালার কথা মনে আছে নিশ্চয়ই ; ছোট্ট মিনির সাথে কাবুলিওয়ালার আলাপ তুলে ধরেছিলেন রবি ঠাকুর। তবে আমরা এখানে যে কাবুলিওয়ালার কথা বলছি তাঁর নাম মো: জাবেদ হোসেন। অনেক পরিচয় তার ।
কাবুলিওয়ালাটাও উনার অনেকগুলো পরিচয়ের মধ্যে একটা। YSSE মানে ইয়ুথ স্কুল ফর সোশ্যাল এন্ট্রেপ্রেনার নামে একটা সংগঠনের ভাইস-প্রেসিডেন্টও তিনি!জাবেদ হোসেন ও কিছু সমমনা মানুষের অনন্য ভেঞ্চার কাবুলিওয়ালা!
আইডিয়ার কথা বললে বেশ জমিয়েই নেমেছে কাবুলিওয়ালা! শুরুর দিকের সাথে এখনকার কাবুলিওয়ালার তুলনাটাই তার প্রমাণ। একশোরও বেশী দেশী ও বিদেশী সাপ্লায়ার ও ৫০০০ এরও বেশী প্রোডাক্টস – কাবুলিওয়ালা আসলেই পসার জমাতে পেরেছে।
তুরস্কের সুস্বাদু পাস্তা ব্র্যান্ড, সুইস লাক্সারি ঘড়ি বা রয়াল কাবলি ড্রেস – কাবুলিওয়ালা মানেই যেন একটা রাজকীয় ব্যাপার স্যাপার। সারাদেশে যদিও বা এখনই তাদের আউটলেট নেই ; তবে তাতে করে সারাদেশে পণ্য পৌঁছাতে কিন্তু ঝামেলা নাই! কাবুলিওয়ালা নিজেদের পণ্য গ্রাহক দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে পারেন অনায়াসেই।
ঢাকায় একটা স্টোর, তিনটা ওয়্যারহাউজ আর সিলেটে একটা হাব পয়েন্ট নিয়ে চলা এই অনলাইন মার্কেটপ্লেসে ফ্যাশন, জুয়েলারী, লাক্সারি, ইলেকট্রনিকস সহ হাজারো পণ্যের পশরা রয়েছে।
২০১৬ সালে মেন্স ক্লদিং ‘কাবুলিওয়ালা’ দিয়েই মুল যাত্রা! কাবলি স্পেলাশিস্ট বলা যায়। আর এখন ডালপালা ভালোই গজিয়েছে বলা যায়।
পণ্য ও সেবায় ভিন্নতা তো আছেই ; পেমেন্টেও আছে একাধিক অপশন। ক্যাশ অন ডেলিভারি, কন্ডিশন কুরিয়ারিং, হালের বিকাশ, রকেট এর সাথে ভিসা / মাষ্টারকার্ড সুবিধাও আছে। শুধু পেমেন্ট বলে কথা নয়; কেনাকাটার ক্ষেত্রেও রয়েছে Customer-friendly মনোভাব! অ্যাপ, ওয়েবসাইট / মেসেঞ্জার, ডিরেক্ট কল – সব সুবিধাই এভেইলেভেল। কাবুলিওয়ালার মটো ‘ওয়ান ক্লিক অ্যাওয়ে’র সাথে যেটা খুব মানানসই।
কাবুলিওয়ালারা শুধু পণ্য ফেরী করেন এমনটা মোটেও নয়! মানবতার ফেরীওয়ালাও বলা যায় তাঁদের। কোভিড মহামারীতে ১০০ পরিবারকে নিত্যপণ্য সহায়তা, অরফান সেন্টারে ইফতার আয়োজন, শীতে ৫০০০ মানুষের মাঝে কম্বল বিতরণ তাদের মানবিক কার্যক্রমের ক্ষুদ্র অংশ!
আর কাবুলিওয়ালার সামাজিক উদ্যোগের দিকটাই বোধকরি সবচেয়ে ইউনিক! নেক্সট জেন কার্নিভ্যাল, সোশ্যাল এন্ট্রেপ্রেনার সামিট, ডিজিটাল মার্কেটিং মাস্টারমাইন্ড, ইয়ুথ সিম্পোজিয়াম, কাবুলিওয়ালা ফর এন্ট্রেপ্রেনার এবং সাথে YSSE! এই ফ্ল্যাগশীপ প্রোগ্রামগুলোই জানান দিচ্ছে কাবুলিওয়ালার শিকড় বেশ গভীরে প্রোথিত। ২০০০ এরও বেশী শিক্ষার্থীরা এর মাধ্যমে উপকৃত হয়েছে।
এই এপ্রিলেই যাত্রা শুরু করে কাবুলিওয়ালা ফ্রেশ! ওয়ান স্টপ গ্রোসারী সলিউশন বলা যেতে পারে। আপাতত মিরপুর থেকেই অপারেশন চালাচ্ছেন! ধীরে কিন্তু নিশ্চিতভাবেই পুরো ঢাকা মেট্রোতে ছড়িয়ে যেতে চান। Hassle-free শপিং এর অভিজ্ঞতা মানুষকে বুঝিয়ে দেয়াটাই লক্ষ্য।
আবারো কী রবি ঠাকুরের কাছে ফিরে যাবো?রবি ঠাকুরের কাবুলিওয়ালা শুধু ড্রাই-ফ্রুট বিক্রি করতো আর মিনির সাথে আলাপ জমাতো বেশ। কাবুলিওয়ালার পণ্য কিন্তু ৫০০০+ ; আর কাবুলিওয়ালার লক্ষ্য পুরো দেশের সাথেই আলাপ জমানো!
কাবুলিওয়ালাদের একটা সিগনেচার ট্রেডমার্ক যেমন ছিলো ; তেমনি এই ‘কাবুলিওয়ালারাও ‘ একটা সিগনেচার ব্র্যান্ড হতে চায়! লক্ষ্য শীঘ্রই উপলক্ষ খুঁজে পাবে।