অনলাইনে আসলে মাথাটা খারাপ হয়ে যায়। কেউ কাউকে রোস্ট করছে আবার কেউ ছোট করে যাচ্ছে। আমার ফেসবুকের ফ্রেন্ডলিস্টে ১০ জন মানুষ এমন আছে যারা সারাদিন ডিপ্রেশনের পোস্ট দিয়ে যাচ্ছে। কাকে মোটিভেশন দিব বলতে পারি না, কারন আমি নিজেই দশবার ডিপ্রেশনে পড়ে যাই সপ্তাহে। আবার পেটে বার্গার পড়লে সব ঠিক লাগে কিন্তু আবার চলে যায়। বার্গার আবার বেশি দামি কিভাবে প্রতিদিন খাই বলুন। যাইহোক, প্রতিদিনের মতো সকালে নিউজফিড খুলে দেখলাম সবাই কতো কিছু শেয়ার করে। আমার বন্ধুরা আবার সুন্দর কোন মেয়ে কিছু পড়াচ্ছে দেখলে সবার আগে তার লাইভ খুলে কিছু শিখুক বা না শিখুক সেটা দেখতে থাকে। দেখলাম একটা মেয়ে ৫ টা ইংরেজি স্ট্রাকচার পড়াচ্ছে। এমনি ছোট বেলায় চৌধুরীর বই থেকে অনেক ইংরেজি শিখেছি।
যদি এক কথায় বলি আমি অনন্ত জলিল ভাইয়ের থেকে ২ টা ইংরেজি ভালো পারি। তাও কনফার্ম করে বলতে পারছি না কারন বলা যায় না সবাই আবার আমার মতো পিপল ডাসন্ট বলে কিনা ডু এর জায়গায়। মানে এই ভূল আমার শুধারানোর নয়।
যাইহোক, শুরু হলো ভিডিও তাও সালাম দিয়ে গুড পিপলকে। এখন বলেন সব মানুষতো আর গুড হয় না। কিছু মানুষ ব্যাড পিপল তাও দেখছে ভিডিও। আমার কি আমি তো ভিডিও দেখতে আসছি। মাথার উপর দিয়ে গেল এই কথাটা যে আমি ভার্বটা পরিবর্তন করে নিলে নাকি বাকি সবগুলো স্ট্রাকচার পারবো।
সমস্যা হচ্ছে ভাই আমি ভার্ব চিনি না। তাও ঠিক আছে চলে বলেন। শুরুতেই সে বলল, “It’s my turn to” প্রথম ট্রাকচার। মানে আমার মাথায় মনে হলো যে আমার মা বলছে , তোর ভাইকে মাইর দিলাম, এখন তোর পালা, কিনবা এমন যে তোর জন্য আমি পানি এনে দিয়েছিলাম আগে , এইবার তোর পালা। অথবা আপনি কারো সাথে জগড়া করছেন, বলতে বলতে বলে ফেললেন “It’s my turn to speak”।
আরেহ! ভাই আমি এই স্ট্রাকচারটা শিখে ফেলছি। তাহলে এখন আমার জীবনে সব কিছুর পালা। আমি সারাদিন পরে টিভি দেখি মাঝে মাঝে। কিন্তু বাবা মা এর জ্বালাতে পারি কোথায় বলেন? মা কে বললে বলে – সে টিভি দেখতে ভালোবাসে মানে “She likes to watch TV”। কিন্ত এই ইংরেজি টিচার বলে পরের স্ট্রাকচার হচ্ছে “I like watching TV.” মানে বাবারে এইটা ভালো লাগে শুনতে। সত্যি কিন্তু ম্যাম বললো ভার্ব এর পাশে যদি ভার্ব বসে, তাহলে পরের ভার্বের সাথে ing হয়।
এমনিতেই আমি পারি না কিন্তু মনে হলো খুব সহজেই আমার মতো বাবলু টাইপ মানুষের মাথায় ভার্বের ইকুয়েশন ঢুকে গেল। আমি ছোটবেলা থেকেই আমার মায়ের পিছনে ঘুরে বেড়াই কিন্তু আমার মা আমাকে জীবনে বাসা থেকে বের হবার পারমিশন দিতে চায় না। কেন জানেন? বাসা থেকে বের হলে আমার নাকি আসার নাম নাই। এখন আমি কি করবো আমাদের মতো বয়সী মানুষদেরতো আর টাইমটেবলের ঠিক থাকে না। কিন্তু আমার মাকে যদি ইংরেজিতে একটা কিছু বলে দিতে পারতাম তাহলে হয়ত আমাকে ২ নাম্বারের মাইর দিত তাও বাহিরে যেতে পারতাম। এই টিচার বলছিল আরেকটা স্ট্রাকচারের কথা “I’ll let you go”।
আমার জীবনে মনের মানুষ ছাড়া কেউ বলে নাই এইটা আমাকে। আমি জানতাম না এইটা একটা স্ট্রাকচার তাহলে আমাকে যখন কেউ ছ্যাকা দিয়ে বলতো যে “I’ll let you go”, তাহলে আমি তাকে বলতাম- নাইস ইংলিশ স্ট্রাকচার। এইখানে আবার লেট ইউটা কিন্তু স্ট্রাকচার। আপনি এখন প্রাকটিস করেন আমার মতো- কাকে কাকে আপনি এই লেট ইউ গো বলে দিবেন।
ম্যামের পরের স্ট্রাকচারটা শুনে আমি হাসতে হাসতে পরে গেলাম বিছানা থেকে। শুনেন আপনি , – “She will make me” আমাকে আমার জীবনে বোকা বানানো ছাড়া মানুষ আর কিছু করে নাই। এখন তাহলে আমি হয়ত বলতে পারি, – “She will make you a fool”। না থাক ভাই, আমি আপনাদেরকে এই লেখার মাধ্যমে ফুল বানাতে চাই না আমি আপনাকে বানাতে চাই ফ্যান।
আমি ভিডিও দেখতে দেখতে এক মিনিট এইদিকে তাকাইলাম না। কারন আসলেই আপনি এই লেখা পড়তে পড়তে কত কিছু শিখে গেলেন তাই না। সত্যি বলতে গেলে আমাদের দেশে এমন শিক্ষক কোথায় আছে যারা খুব সহজেই আমাদেরকে পড়ায় বলে। শেষের স্ট্রাকচারটি শুনে মনে হলো না- এই শিক্ষককে নিয়েই বলা যায় আসলে কিছু।
স্ট্রাকচারটা ছিল – Because of being তার মানে কোন কিছু হবার কারনে। বলতে আমরা বলতে পারি উনার মতো শিক্ষকের কারনে অনেক ছাত্র-ছাত্রি পড়ালেখাতে এগিয়ে যাচ্ছে। আবার অনেকেই দেখি উনার কমেন্টে লেখে আপনি সুন্দর তাই ছাত্র বেশি। মানে – Because of being beautiful, she has most students in her batch. যদিও সুন্দর কোন ব্যাপার না, সুন্দর হতে পারে কিন্তু আসলেই খুব সহজে ৫ টা স্ট্রাকচার পড়িয়ে ফেললো। হয়েছে আজকে সারাদিন আমি যতো কথা বলবো কোন না কোন ভাবে এই কথার স্ট্রাকচার দিয়ে বলব। যদি বেঁচে থাকি আমরা।
লিখছিলাম একজন শিক্ষক আকাঙ্খা সিকদারের একটা লেকচার নিয়ে। আমার কাছে অনেকটা ইংলিশ ভিংগ্লিশের মতো। আমি জানি না আমাদের দেশে কতো শ্রী দেবী আছে যাদের নিজেদের জন্য ইংরেজি শিখতে চায়। ছেলে মেয়ে কে দামি ইংরেজি মাধ্যমে দিয়ে বাকি অভিভাবকদের ইংরেজি শুনে ভয়ে কথা বলে না। কিনবা সেই ছেলেটা যে প্রেজেন্টেশনের আগমূহুর্তে বলে “ দোস্ত আমি ইংরেজি পারব না ”। তাদের মতো মানুষদের জন্য আমাদের এই ইংরেজি শিক্ষিকা।
আশা করি মন্তব্যে জানাতে ভুলবেন না আপনি কি শিখতে পারলেন কিছু নাকি “It’s my turn to beat you” । আচ্ছা বাদ দেন “ I’ll let you go”
জয়িতা ব্যানার্জী, সিইও, টকস্টোরি