মানুষের জন্য কাজ করছেন বহুমুখী প্রতিভার হাসান মতিউর

খুব ছোটোবেলায় মাকে হারায় হাসান মতিউর রহমান। এরপর থেকে বাবাই বাবা আবার বাবাই মা। তার সব ধরণের দেখাশোনার দায়িত্ব পালন করে আসছেন বাবা, একা হাতে খুবই নিপুণভাবে সংসার পরিচালনা করছেন, তাইতো হাসানের চোখে তার বাবাই সব, একজন বেস্ট ফ্রাদার। তাই পরিবার মানেই তার কাছে বাবা আর আপুকে নিয়ে ঘিরেই তার সমস্ত ভালোবাসা, ভালোলাগা, তাদের ছোট্ট সুখের নীড়।

হাসানের জন্ম গোপালগঞ্জে তবে বেড়ে উঠা ঢাকাতে। ছোটোবেলা থেকেই তিনি ছিলেন তুখোড় মেধাবী, পড়াশোনার জন্য বিভিন্ন সময় বিভিন্ন স্কুলে পড়েছেন, তবে এরমধ্যে ঢাকা কলিজিয়েট স্কুল এবং গিমাডাঙ্গা টুঙ্গিপাড়া হাইস্কুল অন্যতম। এসএসসির পর পড়াশোনার সুযোগ হয় ঢাকা কলেজে আর তারপরই ছুয়ে ফেলেন তার স্বপ্নকে, ভর্তি হয়ে যান স্বপ্নের বিশ্ববিদ্যালয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে।

এছাড়া ছোটোবেলা থেকেই মডেলিং, অভিনয়ের প্রতি ঝোঁক ছিলো পাশাপাশি আবৃত্তি আর বক্তৃতায় পারদর্শী তিনি, একবার শিশু একাডেমি থেকে আবৃত্তি আর বক্তৃতায় পুরস্কারও পেয়েছিলেন। ছোটোবেলায় এলাকার আশেপাশে অথবা স্কুলে এনকরিং করতে খুবই পছন্দ করতেন তিনি। বড় হয়ে সঞ্চালক হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন, যদিও এখনো ইচ্ছেটা বিদ্যমান। তিনি পরিবার আর এলাকার কাছে আগে থেকেই তার মেধা এবং এক্সট্রাকারিকুলার এক্টিভিটিস এর জন্য হিরো ছিলেন, ভার্সিটিতে চান্স পাওয়ার পর হয়ে যান মহানায়ক।

হাসান মতিউর রহমান বর্তমানে পড়াশোনা করছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের সম্মান তৃতীয় বর্ষে।
পড়াশোনার পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশকিছু ক্লাবের সাথে সংযুক্ত আছেন তিনি। দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত আছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাহিত্য সংসদের প্রচার সম্পাদক ও সূর্যসেন হলের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে। তিনি ইউনিভার্সিটি স্টুডেন্টস এ্যাসোসিয়েশন অভ কোটালীপাড়ার ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক।

এছাড়াও তিনি বাঁধন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিটের এক্সিকিউটিভ মেম্বার হিসেবে আছেন। আছেন বিএনসিসির কর্পোরাল হিসেবে। এছাড়া ঢাকা শহর কেন্দ্রিক ঢাকা মহানগর দক্ষিনের মাদকনির্মূল শক্তির সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে আছেন এবং বিডি ক্লিন এর উইংস হিসেবে আছেন। পাশাপাশি সক্রিয় ভাবে রাজনীতিতেও জড়িত আছেন তিনি।

হঠাৎ তিন বন্ধু মিলে পথশিশুদের পড়াশোনা করানোর উদ্যোগ নেন, ছোটোখাটো একটা সংগঠন তৈরি করে ফেলেন, যেহেতু ছোটো ছোটো বাচ্চাদের জ্ঞান বিকশিত করা হবে তাই নাম দেন ব্লুমিং বার্ডস। সেখানে বাচ্চাদের সপ্তাহে তিনদিন পড়াশোনা শেখানো হয় পাশাপাশি বিভিন্ন দুর্যোগ ও প্রতিটি উৎসবে পোশাক আর খাবার দেওয়া হয়। ছোটোখাটো পরিসরে নিজেরা নিজেরা মিলেই কাজগুলো করেন, এক অদ্ভুত আনন্দও পান তিনি।

উনার এই সকল ভালো কাজগুলোর অনুপ্রেরণা পান বাবার কাছ থেকে, মূলত তার বাবাই তাকে এগুলো শিখিয়েছেন, তিনিও তাদের এলাকায় বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সাথে জড়িত। তাই হাসানের সকল কাজে পরিবারের শতভাগ সাপোর্ট থাকে।

হাসান মতিউর রহমান WHB diary এবং reading room নামের দুটো ইউটিউব চ্যানেলে এডুকেশনাল ভিডিও কন্টেন্ট বানান।বই পড়তে খুবই ভালোবাসেন তিনি, এছাড়াও অবসর সময় মুভি দেখে কাটান। ভবিষ্যতে নিজেকে একটি বড় পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখেন তিনি। তিনি বিশ্বাস করেন নিজেকে ভাল কোথাও নিয়ে যেতে পারলে পারিপার্শ্বিক সবকিছুই এমনিই চলে আসবে।

তিনি বলেন, “যে নিজেকে ডেভলপ না করে সমাজকে ডেভলপ করার কথা ভাবে সে অযোগ্য নয়ত মিথ্যাবাদী” । তাই তিনি আগে নিজেকে উন্নত করতে চান। নিজেকে নিয়ে আপাতত তার একটাই প্লান Will Be informative and diplomatic তাহলে চাকরি, ক্যারিয়ার, বিজনেস, স্টাবলিটি চলে আসবে। তিনি মনে করেন, ভার্চুয়াল জগৎ আর রিয়েলিটির মধ্যে ব্যালেন্স করতে হবে আমাদের নয়ত জ্ঞানশূন্য হয়ে পড়বো।পাশাপাশি প্রাক্টিক্যাল জিনিস নিয়ে ভাবতে হবে আমাদের।

লিখেছেন : সুমাইয়া জামান মিম

Leave a Comment

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।